শিলামণ্ডল :: উপাদান ও স্তর
শিলামণ্ডল বা লিথোস্ফিয়ার কাকে বলে ?
পৃথিবীর শিলাগঠিত কঠিন বহিরাবরণকে শিলামণ্ডল বা Lithosphere বলে। শিলামগুলের আরেক নাম ভূত্বক বা অশ্মমণ্ডল। শিলামগুল ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 35 কিমি গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত।
শিলামগুলের নীচে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত আরও দুটি স্তর রয়েছে। যথা -
- গুরুমণ্ডল বা ব্যারিস্ফিয়ার :- 35কিমি থেকে 2,900 কিমি গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত।
- কেন্দ্রমণ্ডল বা সেন্ট্রোস্ফিয়ার :- গুরুমণ্ডলের নীচে 2,900 কিমি থেকে ভূকেন্দ্র পর্যন্ত বিস্তৃত।
শিলামণ্ডলের উপাদান কী কী ?
শিলামণ্ডল আগ্নেয, পাললিক, ও রূপান্তরিত শিলায় গঠিত। শিলামণ্ডলের প্রায় 98 % শতাংশ অক্সিজেন, সিলিকন, অ্যালুমিনিয়াম, লৌহ, ক্যালশিয়াম ইত্যাদি আটটি মৌলিক পদার্থ দিয়ে গঠিত। এদের মধ্যে অক্সিজেন ( 46.71% ) ও সিলিকনের ( 27.69% ) পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
শিলামণ্ডলের স্তর -
রাসায়নিক উপাদানের ভিত্তিতে
- সিয়াল ( Sial )
- সিমা ( Sima )
টেকটনিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে
- মহাদেশীয় ভূত্বক ( Continental crust )
- মহাসাগরীয় ভূত্বক ( Oceanic crust )
ভূত্বক কী ?
ভূত্বক হল পৃথিবীর সবচেয়ে ওপরের কঠিন শিলাগঠিত স্তর। ভূত্বক কঠিন শিল এবং বিভিন্ন প্লেট ( plate ) দিয়ে তৈরি। ভূত্বক দুই প্রকার, যথা -
- মহাদেশীয় ভূত্বক
- মহাসাগরীয় ভূত্বক
সিয়াল কী ?
ভূতকের ওপরে সিলিকন ( Si ) ও অ্যালুমিনিয়াম ( AI ) সমৃদ্ধ শিলা স্তরকে সিয়াল বলে।
সিমা কী ?
ভূত্বকের নিম্ন অংশে সিলিকন ( Si ) ও ম্যাগনেসিয়াম ( Mg ) সমৃদ্ধ শিলা স্তরকে সিমা বলে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য :-
● সিয়াল মহাদেশীয় ভূত্বক গঠন করে।
● ভূত্বকে সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম গঠিত অংশটি মহাসাগরীয় ভূত্বক।
● মহাসাগরীয় ভূত্বকের প্রধান উপাদান ব্যাসন্ট জাতীয় আগ্নেয়শিলা।
● ভূত্বক ও গুরুমগুলের মধ্যবর্তী সীমানাকে মোহো বিযুক্তি বলা হয়।
● শিলা তিনপ্রকার, যথা -
- আগ্নেয় শিলা,
- পাললিক শিলা
- রূপান্তরিত শিলা
● আগ্নেয় শিলার উদাহরণ - গ্র্যানিট, ব্যাসন্ট, ডায়োরাইট ইত্যাদি।
● পাললিক শিলার উদাহরণ - কয়লা, বেলেপাথর, চুনাপাথর, ডলোমাইট ইত্যাদি।
● রূপান্তরিত শিলার উদাহরণ - গ্র্যানিট রূপান্তরিত হয়ে নিস, পাললিক শিলা রূপান্তরিত হয়ে কোয়াজাইট গঠন করে।
● কয়লা ও খনিজ তেলকে একত্রে জীবাশ্ম জ্বালানি বলা হয়।
● রূপান্তরিত শিলায় জীবাশ্ম পাওয়া যায় না।
● মাটির প্রধান উপাদান হল - খনিজ উপাদান ( 45% ), বায়ু ( 25% ), জল ( 25% ) ও জৈব পদার্থ ( 5% ) ।
● সূক্ষ্ম জীবাণুরা জৈব পদার্থকে বিয়োজিত করে যে কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, প্রোটিন ইত্যাদি সমৃদ্ধ পদার্থ সৃষ্টি করে, তাকে হিউমাস ( humus ) বলে।